এনবিআর বিলুপ্ত করে ২ বিভাগ: আজ উপদেষ্টা পরিষদে পাস হতে যাচ্ছে!

এনবিআর বিলুপ্ত করে ২ বিভাগ: সংশোধিত অধ্যাদেশে এক বিভাগের নিয়ন্ত্রণে থাকছেন রাজস্ব কর্মকর্তারা।

অধ্যাদেশে সংশোধনী আনার ফলে এনবিআর কর্মকর্তাদের মধ্যে কিছুটা সন্তোষ ফিরেছে। তারা বলছেন, অন্তত একটি বিভাগের প্রধান হিসেবে এনবিআর কর্মকর্তাদের নিয়োগ নিশ্চিত হওয়ায় তাদের আন্দোলন যৌক্তিক ছিল বলে প্রমাণিত হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে দুটি পৃথক বিভাগ ‘রেভিনিউ পলিসি ডিভিশন’ এবং ‘রেভিনিউ ম্যানেজমেন্ট ডিভিশন’ তৈরির অধ্যাদেশ আজ বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) উপদেষ্টা পরিষদে পাস হতে যাচ্ছে।

অধ্যাদেশটিতে আনা সংশোধনী অনুযায়ী, নতুন দুটি বিভাগের মধ্যে ‘রেভিনিউ ম্যানেজমেন্ট ডিভিশন’ বা রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধানের পদে এনবিআরের বর্তমান কর্মকর্তাদের মধ্য থেকেই নিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ‘রেভিনিউ পলিসি ডিভিশন’ বা রাজস্ব নীতি বিভাগেও সরকার চাইলে এনবিআর অথবা যোগ্যতা সম্পন্ন অন্য কোনো বিভাগ থেকে নিয়োগ দিতে পারবে।

আগের অধ্যাদেশে ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের’ প্রধান পদে রাজস্ব আহরণ সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞদের ‘অগ্রাধিকার’ দেওয়ার কথা থাকলেও সংশোধনীতে বলা হয়েছে, “রাজস্ব আহরণ সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞতা রয়েছে, এরকম কোনো যোগ্য সরকারি কর্মকর্তাকে ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনে নিয়োগ দেবে।” এর মাধ্যমে মূলত এনবিআরের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকেই এই বিভাগের প্রধান নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে।

একইভাবে, ‘রাজস্ব নীতি বিভাগের’ প্রধান হিসেবে আগে ‘উপযুক্ত কোনো কর্মকর্তাকে’ নিয়োগের কথা বলা ছিল। নতুন সংশোধনীতে বলা হয়েছে, “সরকার সামষ্টিক অর্থনীতি, বাণিজ্য নীতি, পরিকল্পনা, রাজস্ব নীতি বা ব্যবস্থাপনা কাজে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কর্মকর্তাকে রেভিনিউ পলিসি ডিভিশনে নিয়োগ দিতে পারবে।”

ফলে এক্ষেত্রে সরকার চাইলে এনবিআর বাদেও অন্য কোনো বিভাগের যোগ্য কর্মকর্তাকে এ বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবে।

এছাড়া উভয়-বিভাগে কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রেও সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

গত মে মাসে সরকার এনবিআর বিলুপ্ত করে নতুন অধ্যাদেশ জারির পরে এনবিআরের বর্তমান কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। তাদের আন্দোলনের মুখে পরবর্তীতে অধ্যাদেশটি সংশোধন করা হয়।

কর্মকর্তাদের অভিযোগ ছিল, অধ্যাদেশটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে দুটি বিভাগের প্রধান হিসেবে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি হয় এবং রাজস্ব কর্মকর্তাদের শীর্ষ পদে আসার পথ সংকুচিত হয়ে পড়ে।

এর প্রতিবাদে কর্মকর্তারা গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে আন্দোলন শুরু করেন এবং জুনের শেষ দিকে বন্দর অচল করার মতো কর্মসূচিও পালন করেন। এর প্রেক্ষিতে সরকার কঠোর অবস্থান নেয়। এখন পর্যন্ত ৩৬ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিষ্কার, পাঁচজনকে বাধ্যতামূলক অবসর এবং প্রায় ৪০০ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।

তবে অধ্যাদেশে সংশোধনী আনার ফলে এনবিআর কর্মকর্তাদের মধ্যে কিছুটা সন্তোষ ফিরেছে। তারা বলছেন, অন্তত একটি বিভাগের প্রধান হিসেবে এনবিআর কর্মকর্তাদের নিয়োগ নিশ্চিত হওয়ায় তাদের আন্দোলন যৌক্তিক ছিল বলে প্রমাণিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *