কর ফাঁকির কারণে ২০২৩-এ ২ লাখ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারিয়েছে বাংলাদেশ:সিপিডির গবেষণা

তামিম আহমেদ তার সুপারিশে করপোরেট সেক্টরের কর সর্বনিম্ন ১৫ শতাংশ করে কীভাবে এ সেক্টরে রাজস্ব আদায়ের হার বাড়ানো যায় সে বিষয়ে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দেন।

কর ফাঁকির কারণে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ প্রায় দুই লাখ ২৬ হাজার ২৩৬ কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে। এরমধ্যে ৫০ শতাংশ কর ফাঁকি দিয়েছে করপোরেট খাত। যার পরিমাণ প্রায় এক লাখ ১৩ হাজার ১১৮ কোটি টাকা। শুধু ২০২৩ সাল নয়, ২০১১ সাল থেকে কর ফাঁকির পরিমাণ বেড়েছে। ২০১২ সালে ৯৬ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা এবং ২০১৫ সালে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকার রাজস্ব পায়নি রাষ্ট্র। বাংলাদেশে মোট কর ফাঁকির পরিমাণ ৪১৮ বিলিয়ন থেকে ২ হাজার ২৩০ বিলিয়ন টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এসব তথ্য ওঠে এসেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণায়।

২০১১ সাল থেকে কর ফাঁকির পরিমাণ বেড়েছে। ২০১২ সালে ৯৬ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা এবং ২০১৫ সালে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকার রাজস্ব পায়নি রাষ্ট্র। বাংলাদেশে মোট কর ফাঁকির পরিমাণ ৪১৮ বিলিয়ন থেকে ২ হাজার ২৩০ বিলিয়ন টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) সিপিডির কার্যালয়ে বাংলাদেশের উত্তরণে করপোরেট আয়কর সংস্কার বিষয়ক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন সিপিডির সিনিয়র গবেষণা সহযোগী তামিম আহমেদ।

তামিম আহমেদ তার উপস্থাপনায় বলেন, ‘আগামী বছরের নভেম্বর নাগাদ বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েট হতে যাচ্ছে। কিন্তু এর পরের ট্রান্সজেকশন সহজ করার জন্য রাজস্ব আদায় করা সহজ করতে হবে। শুধু রাজস্ব আদায় করলে হবে না। এর পাশাপাশি ন্যায্যতার ভিত্তিতে এটিকে দেখতে হবে। আমাদের গবেষণায় এনবিআর, এলডিসি সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জরিপ, ফোকাস ডিসকাশন করেছি। যেখানে কর ফাঁকির ক্ষেত্রে উচ্চ কর হার, প্রশাসনিক দুর্বলতা, জটিল আইনি কাঠামো এবং কর ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক দুর্নীতি অন্যতম কারণ। এছাড়া দেশের ৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ট্যাক্স আদায় করে থাকে। যেগুলো বড় প্রতিষ্ঠান। বাকি ৯১ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের কর আদায় হচ্ছে কিনা সে তথ্য নেই।‘

তামিম আহমেদ তার সুপারিশে করপোরেট সেক্টরের কর সর্বনিম্ন ১৫ শতাংশ করে কীভাবে এ সেক্টরে রাজস্ব আদায়ের হার বাড়ানো যায় সে বিষয়ে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দেন।

গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম কর আদায়ে ন্যায্যতার বিষয়ে সরকারকে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আগামীতে দেশের এগিয়ে চলার পথে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে কীভাবে রাজস্ব আদায় বাড়ানো যায়। বর্তমানে দেশে ২০ শতাংশ কর আসে করপোরেট খাত থেকে আর ৪০ শতাংশ আসে মূল্য সংযোজন কর থেকে।

এসময় তিনি করপোরেট খাতে কর বৃদ্ধির পাশাপাশি ন্যায্যতার ভিত্তিতে কর আদায়, রাজস্ব ব্যবস্থায় প্রণোদনা দেয়া বন্ধ করা ও কর আদায়ের ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইডজ করে কর জমা দানে ভোগান্তি দূর করতে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।

সিপিডি ও খ্রিস্টান এইডের যৌথ এ গবেষণায় দেশের রাজস্ব বৃদ্ধির ক্ষেত্রে করপোরেট খাতে যথাযথ নজর দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিফ্রিংয়ে এসময় উপস্থিত ছিলেন খ্রিস্টান এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর নুসরাত জাবিন, গবেষক মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন, তাসনিম নূর পিংকী ও ইখতেখারুল ইসলাম।

2 thoughts on “কর ফাঁকির কারণে ২০২৩-এ ২ লাখ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারিয়েছে বাংলাদেশ:সিপিডির গবেষণা

Leave a Reply to Ainsley3691 Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *