জমি বিক্রির অপ্রদর্শিত টাকা কর দিয়ে সাদা করা যাবে

** সম্পত্তি হস্তান্তর কাঠাপ্রতি ২০ লাখ টাকার পরিবর্তে শতাংশ প্রতি ১২ লাখ টাকার উপর কর আদায় হবে
** নতুন নিয়মে জমি বিক্রিতে বিগত পাঁচ বছরের আয়ের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা পাওয়া যাবে
** জমি কেনাবেচার ওপর কর এলাকাভেদে ৬, ৪ ও ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হতে পারে, যা এখন ৮,৬ ও ৪ শতাংশ

জমি বা অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রির মাধ্যমে দলিল মূল্যের অতিরিক্ত অর্থকে ১৫ শতাংশ হারে কর দিয়ে বৈধ বা সাদা করার সুযোগ দিতে যাচ্ছে সরকার। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর এই সুবিধা দেওয়া হতে পারে। নতুন নিয়মে জমি বিক্রিতে বিগত পাঁচ বছরের আয়ের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে।

সূত্রমতে, বিক্রির পর দলিলে উল্লেখিত মূল্যের চেয়ে বেশি অর্থ পেলে তা ‘ক্যাপিটাল গেইন’ হিসেবে গণ্য হবে, যার ওপর কর হার ১৫ শতাংশ। এর আগে শুধু সংশ্লিষ্ট বছরের আয় সাদা করার সুযোগ থাকলেও নতুন নিয়মে বিগত পাঁচ বছরের আয়ের ক্ষেত্রেও এ সুবিধা পাওয়া যাবে।

প্রস্তাবিত বাজেটের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি দলিল মূল্যের বেশি অর্থ পায়, তবে সেই অর্থের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর দিয়ে তা বৈধ করা যায়, তবে সেক্ষেত্রে পরের বছর আয় সংশ্লিষ্ট বছরের কর ফাইলে দেখাতে হয়। তবে আগের পাঁচ বছরের আয় বৈধ করার স্পষ্ট কোনো নিয়ম নেই। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে জমি বা অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি থেকে আসা অতিরিক্ত আয়ও ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করা যাবে।

বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হচ্ছে, কোনো ব্যক্তি কর্তৃক কোনো জমি বা জমিসহ স্থাপনা হস্তান্তরকালে দলিল মূল্যের অতিরিক্ত কোনো অর্থ ব্যাংক বিবরণীসহ দালিলিক প্রমাণাদি দ্বারা সমর্থিত হলে-এক্ষেত্রে মূলধনী আয়ের উপর সপ্তম তফসিলের অনুচ্ছেদ-১ এর করহার অনুসারে কর প্রদান করতে হবে।

আয়কর আইন, ২০২৩ এর সপ্তম তফসিলে বলা হয়েছে-কোম্পানি কর্তৃক অর্জিত মূলধনি আয়ের উপর ১৫ শতাংশ। কোম্পানি ব্যতীত অন্যান্য করদাতাদের ক্ষেত্রে, যেইক্ষেত্রে মূলধনি পরিসম্পদ অর্জন বা প্রাপ্তির অনধিক ৫ বছরের মধ্যে পরিসম্পদ হস্তান্তর হয়, সেক্ষেত্রে এইরূপ মূলধনি আয় মোট আয়ের অর্ন্তভূক্ত হবে এবং মোট আয়ের উপর নিয়মিত হার। যেইক্ষেত্রে মূলধনি পরিসম্পদ অর্জন বা প্রাপ্তির ৫ বছর অতিক্রান্ত হবার পর পরিসম্পদ হস্তান্তর হয়, সেক্ষেত্রে এই রূপ মূলধনি আয়ের ১৫ শতাংশ।

এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণত নিয়মিত কর দিয়ে জমি বিক্রির টাকা সাদা করার উদাহরণ নেই বললেই চলে। ফলে বড় অঙ্কের অর্থ মানুষের হাতে থাকলেও তা ট্যাক্স ফাইলে না দেখানোয়—অর্থনীতির মূল স্রোতে আসতে পারছে না।

অপরদিকে, বর্তমানে কাঠাপ্রতি ২০ লাখ টাকার ওপর কর আদায় করা হয়। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে কাঠার পরিবর্তে শতাংশ হিসেবে ১২ লাখ টাকার ওপর কর আদায় হবে।

এনবিআর সূত্রমতে, জমি কেনাবেচার ওপর কর এলাকাভেদে ৬, ৪ ও ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হতে পারে, যা এখন ৮,৬ ও ৪ শতাংশ। ফ্ল্যাট ও জমি কেনায় কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বর্তমানে যে করহার আছে, তা এলাকাভেদে কয়েক গুণ বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে। এমনকি অর্থের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন করার সুযোগও রাখা হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *